সর্বশেষ

Sunday, 4 July 2021

Wednesday, 30 June 2021

Tuesday, 29 June 2021

পরিবারের অসতর্কতা পানিতে ডুবে মারা যায় ৮২ শতাংশই শিশু : জরিপ

পরিবারের অসতর্কতা পানিতে ডুবে মারা যায় ৮২ শতাংশই শিশু : জরিপ

দেশে পানিতে ডুবে মৃত্যুর ঘটনায় ৮২ শতাংশই ১৮ বছরের কম বয়সী শিশু। এদের ৮০ শতাংশের বয়স ৯ বছরের কম। পরিবারের সদস্যদের অসতর্কতার কারণে সিংহ ভাগ মৃত্যু হয়। পানিতে ডুবে মোট মৃতদের ৮১ শতাংশ পরিবারের সদস্যদের অগোচরে পানির সংস্পর্শে যায় এবং ডুবে মারা যায়। গ্লোবাল হেলথ অ্যাডভোকেসি ইনকিউবেটরের (জিএইচএআই) সহযোগিতায় গণমাধ্যম ও যোগাযোগ বিষয়ক প্রতিষ্ঠান “সমষ্টি” পরিচালিত জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ের গণমাধ্যমে প্রকাশিত পানিতে ডুবে মৃত্যুর সংবাদ বিশ্লেষণ থেকে এমন তথ্য উঠে আসে।
এ বছরের পহেলা জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ থেকে দেখা যায়, ২০২০ সালে ৪২৫টি পৃথক ঘটনায় সারাদেশে ৭৬৯ জন ব্যক্তি পানিতে ডুবে মারা যায়। মৃতদের ৮২ শতাংশই শিশু। চার বছর বা কম বয়সী ২৪৮ জন শিশু, ৫ থেকে ৯ বছর বয়সী ২৫৮ জন, ৯-১৪ বছরের ৯৯ জন এবং ১৫-১৮ বছরের ২৮ জন। এ বছর পানিতে ডুবে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু ঘটনা ঘটে ঢাকা বিভাগে, ১৮৪ জন। এছাড়া চট্টগ্রামে ১৪৫ জন, রংপুরে ১১৩, রাজশাহীতে ১০০, ময়মনসিংহে ৮৮, বরিশালে ৫১ ও খুলনা বিভাগে ৪৭ জন মারা যায়। এ সময়ে সবচেয়ে কম মৃত্যু ছিল সিলেট বিভাগে, ৪১ জন। নেত্রকোনা জেলায় ২০২০ সালে সবচেয়ে বেশি মানুষ পানিতে ডুবে মারা যায়, ৪৮ জন। পরবর্তী স্থানগুলোতে রয়েছে ঢাকা, নোয়াখালী, দিনাজপুর, গাজীপুর ও কুড়িগ্রাম জেলা। এসব জেলায় যথাক্রমে ৪৩, ৩১, ৩০, ২৭ ও ২৫ জন মারা যায়। বান্দরবান, শরীয়তপুর, খুলনা ও নড়াইল জেলায় কারো মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি। দিনের প্রথম ভাগে অর্থাৎ সকাল থেকে দুপুরের মধ্যে ৩১২ জন এবং দুপুর থেকে সন্ধ্যার আগে ৩০৯ জন মারা যায়। এছাড়া সন্ধ্যায় ১২১ জন মারা যায়। ১৬ জন রাতের বেলায় পানিতে ডোবে। জুন থেকে অক্টোবর মাসের মধ্যে সর্র্বোচ্চ সংখ্যক ৫৪১ জন মানুষ পানিতে ডুবে মারা যায়। সবচেয়ে বেশি মৃত্যু ঘটে আগস্ট মাসে, ১৬৬ জন। জুন মাসে ৯০ জন, জুলাই মাসে ১৩৪ জন, সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসে যথাক্রমে ৭৩ ও ৭৮ জন মারা যায়। সবচেয়ে কম সংখ্যক মৃত্যু ছিল ফেব্রুয়ারি মাসে, ১০ জন। এ বছর ৬৩ পরিবারের ১৭০ জন সদস্য পানিতে ডুবে মারা যায়। যাদের মধ্যে শিশুর সঙ্গে ভাই অথবা বোনসহ ৫৫ জন, বাবা-মাসহ ১৭ জন, দাদা-দাদি বা নানা-নানিসহ ৪ জন, চাচাত বা খালাতো ভাই বা বোনসহ ৮১ জন, চাচা-খালাসহ ১৩ জন মারা যায়। পানিতে ডুবে নিহতদের মধ্যে ২৯৪ জন নারী। এদের মধ্যে কন্যা শিশু ২৬৪ জন। ৬৫৩ জন কোনো না কোনো ভাবে পানির সংস্পর্শে এসে ডুবে যায়। বাকি ১১৬ জন মারা যায় নৌযান দুর্ঘটনায়। পানিতে ডুবে মৃতদের মধ্যে ১৭ জন বন্যার পানিতে ডুবে মারা গেছে। পরিবারের সদস্যদের যথাযথ নজরাদারি না থাকায় সবচেয়ে বেশি সংখ্যক পানিতে ডোবার ঘটনা ঘটে। ৬২২ জন বড়দের অগোচরে বাড়ি সংলগ্ন পুকুর বা অন্য জলাশয়ে চলে যায় এবং দুর্ঘটনার শিকার হয়। নৌযান দুর্ঘটনার সবচেয়ে বড় ঘটনাটি ঘটে এ বছরের ২৯ জুন। বুড়িগঙ্গা নদীতে এমএল মর্নিং বার্ড নামের একটি লঞ্চ ময়ূর-২ নামের আরেকটি বড় লঞ্চের ধাক্কায় ডুবে যায়। এতে ৩২ জন মারা যায়। ৫ আগস্ট নেত্রকোনার মদন উপজেলায় হাওরে নৌকা ডুবে ১৭ জন মারা যায়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২০১৪ সালের বৈশ্বিক প্রতিবেদন অনুযায়ী বাংলাদেশে ৫ বছরের কম বয়সী শিশুমৃত্যুর ৪৩ শতাংশের কারণ পানিতে ডুবে মারা যাওয়া। যুক্তরাষ্ট্রের ইনস্টিটিউট অফ হেল্ধসঢ়;থ মেট্রিক্স অ্যান্ড ইভালুয়েশন (আইএইচএমই) এর ২০১৭ সালে প্রকাশিত গ্লোবাল বারডেন অব ডিজিজ স্টাডি শীর্ষক প্রতিবেদনে বাংলাদেশে ২০১৭ সালে ১৪ হাজার ২৯ জন মানুষ পানিতে ডুবে মারা যায়। এ রিপোর্ট অনুযায়ী পানিতে ডুবে মৃত্যুর দিক থেকে কমনওয়েলথ ভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান পঞ্চম। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ২০১৭ সালে প্রকাশিত প্রিভেন্টিং ড্রাওনিং: অ্যান ইমপ্লিমেন্টেশন গাইডে স্থানীয় পর্যায়ের মানুষজনকে সম্পৃক্ত করে দিবাযত্ন কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার কথা বলেছে। এছাড়া পানিতে ডুবে শিশুমৃত্যু রোধে পারিবারিক পর্যায়ে সচেতনতা তৈরি ও জাতীয়ভাবে কর্মসূচি গ্রহণ করার উপরও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ও স্থানীয় প্রতিষ্ঠান সুপারিশ করেছে।
পানিতে ডোবা - প্রাথমিক চিকিৎসা

পানিতে ডোবা - প্রাথমিক চিকিৎসা

পানিতে ডুবে যাওয়ার পরে নাক মুখ দিয়ে পানি ফুসফুসে প্রবেশ করার ফলে রোগীর শ্বাসরোধ হয়ে আসে এবং প্রচুর পানি খেয়ে পেট ফুলে ওঠে। এভাবে 4 থেকে 6 মিনিট শ্বাস বন্ধ থাকলে সাধারণত মৃত্যু ঘটে।
প্রাথমিক চিকিৎসা: ১) যদি কেউ পানিতে ডুবে যায় তবে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ডুবন্ত ব্যক্তিকে উদ্ধার করতে হবে।এবং উদ্ধারের জন্য পারদর্শী লোকের প্রয়োজন নতুবা উদ্ধারকারীর জীবন বিপন্ন হতে পারে। ২)যার শ্বাস বন্ধ হয়ে গেছে তাকে পানি থেকে তোলার আগেই নাke- মুখে কিছু থাকলে তা দ্রুত আঙ্গুল দিয়ে পরিষ্কার করে, মুখে মুখ রেখে শ্বাস দিতে হবে। ৩)যদি মুখে মুখে শ্বাসক্রিয়া চালু না করা যায় অর্থাৎ বাতাস যদি ফুসফুসে প্রবেশ না করে তবে বুঝতে হবে শ্বাসনালী ও ফুসফুস পানিতে ভর্তি। তখন রোগীকে ডাঙ্গায় তুলে এনে ফুসফুস থেকে পানি বের করতে হবে। প্রথমে রোগীকে উপুড় করে শুইয়ে দিতে হবে। তারপর পেট ধরে উচু করতে হবে যাতে মাথা বুক নিচের দিকে থাকে। আস্তে আস্তে চাপ দিতে হবে।এতে করে পাকস্থলী শ্বাসনালী ও ফুসফুসের পানি বের হয়ে আসবে। পানি বের করার জন্য বেশি সময় দেয়া যাবে না।তারপর কৃত্রিম পদ্ধতিতে শ্বাস-প্রশ্বাস চালিয়ে যেতে হবে যতক্ষণ পর্যন্ত না স্বাভাবিক শ্বাস-প্রশ্বাস আরম্ভ হয়। ৪) সম্ভব হলে ভেজা কাপড় খুলে দিতে হবে। হাত পা ঠান্ডা হলে মেসেজ বা গরম সেঁক দিতে হবে। ৫) রোগীকে আরামে শুয়ে রাখতে হবে ,পায়ের দিকে কিছু উপরে ও মাথা কিছু নিচের দিকে রাখলে ভালো হয়। ৬) অবস্থা ভাল থাকলে কুসুম গরম দুধ, চা ইত্যাদি খেতে দেয়া যায়। অবস্থা ভালো না হলে নিকটস্থ হাসপাতালে দ্রুত নিয়ে যেতে হবে এবং প্রয়োজনে অক্সিজেন দিতে হবে।
প্রতিদিন গড়ে ৩২ শিশুর প্রাণ যাচ্ছে, তুবও কেন উপেক্ষা?

প্রতিদিন গড়ে ৩২ শিশুর প্রাণ যাচ্ছে, তুবও কেন উপেক্ষা?

বলা চলে শিশুদের জীবনটা বেশ সস্তাই এদেশে থেমে নেই জলে ডুবে শিশু মৃত্যু। আজও নেত্রকোনার আটপাড়ায় আমির হামজা (৬) ও সানি (৫) নামের দুজন শিশু মারা গেছে। এর আগে ১৬ অক্টোবর দু’জন ও ১৫ অক্টোবর সরিষাবাড়ি, নেত্রকোনা ও লক্ষিপুওের ছয় শিশুর পানিতে ডুবে মৃত্যু হয়। এমনিভাবে গত ১০ দিনে গনমাধ্যমে অন্তত ২০ শিশুর পানিতে ডুবে মৃত্যুর খবর চোখে পড়ে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে ১ থেকে ১৭ বছর বয়সি শিশু মৃত্যুর দ্বিতীয় প্রধান কারণ পানিতে ডোবা। প্রতিদিন গড়ে ৫০ শিশু পানিতে ডুবে মারা যায় এদেশে। এই ৫০ শিশুর মধ্যে আবার ৩২ জনই চার বছরের কম বয়সি, যাদের মোট সংখ্যা বছরে দাঁড়ায় ১২ হাজার।
বাংলাদেশে পাঁচ বছরের কম বয়সি শিশু মৃত্যুর প্রধান কারণ পানিতে ডোবা। কিন্তু এনিয়ে কারো কোনো ভাবনা আছে বলে মনে হয় না। প্রতিদিন এতোগুলো শিশু মারা যাওয়া সত্ত্বেও পরিকল্পনা ও নীতি নির্ধারণে মহলের অগ্রাধিকার তালিকায় জায়গা করে নিতে পারেনি জলে ডুবে শিশু মৃর্তু। যার ফলে নেই কোনো সরকারি উদ্যোগ। যদিও বছর জুড়েই পানিতে ডুবে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেই চলে তবে বর্ষা মৌসুমে ও বড় উৎসব, পার্বণ পারিবারিক আয়োজনে কিংবা জাতীয় ছুটিকালীন সময়ে দুর্ঘটনার সংখ্যা বেড়ে যায়। এ বছর কয়েক দফায় বানের পানিতে প্লাবিত হওয়ার ফলে বন্যা দীর্ঘায়িত হয়েছে, যার ফলে সমানতালে ঘটে চলেছে অনাকাঙ্ক্ষিত এই দুঘর্টনা ও মৃত্যু। বিচ্ছিন্নভাবে বিভিন্ন অঞ্চলে একটি-দু’টি করে জলে ডোবার ঘটনা ঘটার ফলে আমরা অনুধাবন করতে পরি না জল শিশুর জন্য কতটা ঝুকিপূর্ণ। উন্নয়ন সংস্থা সিনার্গোস জাতীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনাজনিত শিশু মৃত্যুর তথ্য সংগ্রহ, সংরক্ষণ ও বিশ্লেষণ করে থাকে। সংস্থার দেওয়া তথ্য বলছে, শুধুমাত্র জুলাই মাসে দেশের সংবাদমাধ্যমে ৭৬০ শিশুর মৃত্যুর সংবাদ প্রকাশ হয়েছে। এর মধ্যে ৬৫২ জন অর্থাৎ ৮৬ শতাংশ শিশুর মারা গেছে পানিতে ডুবে। তেমনি জুন মাসে ৮১ শতাংশ বা ৪৮৭ জন, মে মাসে ১৯২ জন শিশু পানিতে ডুবে মারা গেছে। শিশুদের নিরাপত্তা, স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও শিশুদের সুরক্ষা সরকারের সহায়ক নীতিমালা, আইন ও বিধি বিধান রয়েছে। শিশুর প্রতি নিষ্ঠুরতা, শিশু নিপীড়ন ও শিশু মৃত্যুরোধে দেশে সরকারি, বেসরকারি ও এনজিওদের উদ্যোগে উন্নয়ন কার্যক্রম চলছে। পরিকল্পিত সেসব উন্নয়ন কার্যক্রমে ব্যাপক বিনিয়োগের প্রত্যক্ষ ফলাফল হিসাবে শিশু উন্নয়ন সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান বেশ ভালো। আমরা শিশু মৃত্যুহার উল্লেখযোগ্যভাবে কমাতে পেরেছি। গর্ভবতী ও শিশু স্বাস্থ্যসেবা বাড়ির দোরগোড়ায় নিয়ে যাওয়ায় ও পরিবার পরিকল্পনা সেবা বিস্তৃত করার ফলে প্রসবকালীন মা ও শিশুর মৃত্যু কমানো গেছে। গুটিবসন্ত, হাম, পোলিও বিদায় করা গেছে টিকাদান কর্মসূচির সফল বাস্তবায়নের মাধ্যমে। সরকার প্রশংসিত হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী পুরষ্কার প্রহণ করেছেন। কিন্তু আমাদের প্রিয় শিশুরা প্রতিদিন পানিতে ডুবে মরছে। কেউ মরছে নির্যাতনের শিকার হয়ে, কেউ মরছে ধর্ষিত হয়ে, কেউবা রাস্তায় গাড়িচাপা পড়ে। বলা চলে শিশুদের জীবনটা বেশ সস্তাই এদেশে। কেনো ও কোন শিশুরা পানিতে ডুবছে? পানিতে ডুবে শিশুমৃত্যু প্রতিরোধে বাংলাদেশে সরকারি বা বেসরকারি পর্যায়ে খুব বেশি কাজ হয়নি। প্রতিষ্ঠিত এনজিওরা অজানা কারণে পানিতে ডুবে শিশুমৃত্যু নিয়ে কাজ করতে তেমন একটা আগ্রহী নয় বলেই মনে হচ্ছে। কেননা প্রতিষ্ঠিত কোনো এনজিও’র এ সম্পর্কিত কোনো কার্যক্রম কোথাও দৃশ্যমান নয়। তবে আশার কথা হলো, অন্য সব আরও অনেক অবহেলিত, উপেক্ষিত বিষয়ের মতো পানিতে ডুবে শিশু মৃত্যু প্রতিরোধেও এগিয়ে এসেছে কেউ কেউ। অবশ্য তাদের তেমন কোনো পরিচিতি নেই এনজিও খাতে। তেমনই একটি প্রতিষ্ঠান সিআরপিআরবি, যাদের পরিচিতিতে হয়তো তেমন জোরালো নয়। তবে তারা এমন কাজ করছে যা অন্য হাই প্রোফাইলরা এনজিওরা করছে না। তারা আন্তর্জাতিক সংস্থা ব্লুমবার্গ ফিলানফ্রোপিক ও রয়েল লাইফবোট-ইউকে’এর সহযোগিতায় দীর্ঘদিন ধরে পানিতে ডুবে শিশুমৃত্যু প্রতিরোধে কার্যকরী স্থানীয় প্রযুক্তি উদ্ভাবনে কাজ করে আসছে ২০০৫ থেকে। সিআরপিআরবি তার অভিজ্ঞতা ও আন্তর্জাতিক মতামতের ভিত্তিতে বলেছে, দারিদ্র, অসচেতনতা ও প্রতিষ্ঠানিক উদ্যোগহীনতার কারণেই পানিতে ডুবে শিশু মৃত্যুর ঘটনা ঘটেই চলেছে। বাংলাদেশে শিশুরা পানিতে ডুবছে তার বাড়ির ২০ গজের মধ্যে এবং মৃত্যুর এ ঘটনাগুলো ঘটছে। মূলত সকাল ৯টা থেকে বেলা ১টার মধ্যে-যেসময়ে মা-বাবা, বড় ভাইবোন ও কেয়ার গিভাররা অন্য বাস্তুগত কাজে ব্যস্ত থাকেন। এছাড়াও উদ্যেগের বিষয় হলো আমাদেও বাড়ির পাশের ডোবা, নালা, পুকুর, খাল, বিল সব কিছু অরক্ষিত-কোনো প্রতিরক্ষা দেয়াল নেই এবং যার সহজ শিকার হচ্ছে কোমলমতি শিশুরা । তার মানে, ৯টা থেকে বেলা ১টা সময়কালে বাস্তবতার আলোকে বলা যায় গ্রামাঞ্চলে বসবাসকরা আমাদেও শিশুরা অরক্ষিত থাকে। তাহলে করণীয় কী? বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ২০১৭ Preventing drowning: an implementation guide’এ নির্দেশনা দিয়েছে, সেখানে কমিউনিটিকে সম্পৃক্ত করে ডে-কেয়ার সেন্টারের কথা বলা হয়েছে। এছাড়াও নীতি পর্যালোচনা ও দেশীয় প্রেক্ষাপট বিবেচনায় নেওয়ার তথাও রয়েছে। সমাধানটা আসলে জানা। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত, ভিয়েতনামসহ অনেক দেশেই কমিউনিটিকে ও স্থানীয় সরকারকে যুক্ত প্রণিত মডেল সফল হয়েছে। আমাদের দেশে ব্লুমবার্গ ফিলানফ্রোপিক’এর সহযোগিতায় সিআরপিআরবি একযুগের বেশি সময় ধরে পানিতে ডুবে শিশু মৃত্যুরোধে কাজ করছে। তাদের কম্যিনিটি ডে-কেয়ার মডেল “ভাসা ও সলিড” মডেল এক্ষেত্রে সাফল্য এনেছে। সাম্প্রতিক প্রকাশিত আইসিডিডিআরবি, জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয় ও সিআরপিআরবি’র যৌথ জরিপে পাওয়া তথ্য বলছে এ মডেল বাস্তবায়ন করে বছরে ৮ হাজার শিশুর প্রাণ বাঁচানো সম্ভব। প্রয়োজন কার্যকর উদ্যোগ, আন্তঃমন্ত্রণালয় সমন্বয় ও প্রয়োজনীয় অর্থেও সংস্থান করা।

Tuesday, 12 January 2021